জেমস আব্দুর রহিম রানা: তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল গত বৃহস্পতিবার। এ দিনে যশোরের মনিরামপুরে ১২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেও আট ইউনিয়নে রয়ে গেছেন নৌকার শক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী। যারা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের।
এছাড়া ছয়টি ইউনিয়নে রয়েছেন বিএনপি জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী।
যারা বিভিন্ন মেয়াদে আগে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশে ভোটাররা মাঠে উঠতে পারলে পাল্টে যেতে পারে এ উপজেলায় ভোটের হিসাব। বিভিন্ন ইউনিয়নে ভোটারদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবু আনছার। এ নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। গেল নির্বাচনে নৌকা পেলেও এবার দল তাকে বাদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজ উদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছে। ফলে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র ভোট করছেন আবু আনছার। তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
এদিকে এ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। বিএনপির ভোটাররা মাঠে উঠতে পারলে তিনিও ফ্যাক্টর হতে পারেন। কাশিমনগর ইউনিয়নে নৌকার শক্ত বিদ্রোহী না থাকলেও বিএনপি জামায়াতের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক দুই চেয়ারম্যান এয়াকুব আলী ও মিজানুর রহমান রয়েছেন।
ভোজগাতী ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম রিপন মনোনয়ন তুলে নিলেও শক্ত বিদ্রোহী রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।
হরিদাসকাটি ইউনিয়নে ভোটাররা মাঠে ওঠার পরিবেশ পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবীর লিটনকে বেছে নিতে পারেন। মনিরামপুর সদর ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহী না থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন টানা দু’বারের চেয়ারম্যান থানা যুবদলের সম্পাদক নিস্তার ফারুক। এছাড়া এ ইউনিয়নে জামায়াতের শক্ত প্রার্থী আহসান হাবিব লিটন রয়েছেন।
খেদাপাড়া ইউনিয়নে বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হককে ফ্যাক্ট মনে করছেন অধিকাংশ ভোটার। প্রতিটি মোড়ে চায়ের আড্ডায় আলোচিত তিনি। এছাড়া রয়েছেন বিএনপির শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী শামছুজ্জামান শান্ত। সুষ্ঠু পরিবেশ পেলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
ঝাঁপা ইউনিয়নে নৌকার শক্ত বিদ্রোহী রয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স ম আলাউদ্দিন ও সিরাজুল ইসলাম। প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে তাঁদের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। মশ্মিমনগরে শক্ত বিদ্রোহী না থাকলেও রয়েছে বিএনপির স্বতন্ত্র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর।
চালুয়াহাটি ইউনিয়নে সবচেয়ে আলোচিত প্রার্থী নৌকার বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ। আসন্ন নির্বাচনে নৌকা পাওয়া আবুল ইসলাম গেল নির্বাচনেও নৌকা পেয়েছিলেন। তখন তাঁকে হারিয়ে জয়ী হন আব্দুল হামিদ। এবারও তেমনটি ঘটতে যাচ্ছে বলে ধারণা ভোটারদের।
খানপুর ইউনিয়নে রয়েছে নৌকার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। এছাড়া এখানে রয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হলে জয় এ দু’জনের মধ্যে এক জনের হতে পারে।
কুলটিয়া ইউনিয়নে এবার ভোটাররা বেছে নিতে পারেন নৌকার বিদ্রোহী সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আদিত্য মণ্ডলকে। তার পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে বলে তথ্য মিলছে।
নেহালপুরে শক্ত বিদ্রোহী না থাকলেও রয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুস সাদাত। মনোহরপুর ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহীরা মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন। তবে থেকে গেছেন শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টু। ভোটররা মাঠে উঠতে পারলে বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী মশিয়ূর রহমানের সাথে জমতে পারে মিন্টুর লড়াই।
এদিকে প্রতীক পেয়ে গত শুক্রবার থেকে প্রচারণায় নেমেছেন মনিরামপুরের ১৬ টি ইউনিয়নের ৭৯ চেয়ারম্যান, ১৮২ সংরক্ষিত নারী ও ৬০৬ সাধারণ সদস্য প্রার্থী।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।